কাশ্মীরের শান্ত উপত্যকার বৈসরান যখন গুলির শব্দে কেঁপে উঠল, তখন কেউ কল্পনাও করেনি যে সেখানে বেড়াতে আসা ২৬ জন পর্যটকের জীবন হঠাৎ করেই থমকে যাবে। কিন্তু আজ, এক মাস পর, জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ সেই নিরীহ মানুষদের স্মরণে একটি স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। ওমর আবদুল্লাহ বলেন, এই স্মৃতিস্তম্ভটি কোনও ভবন বা পাথরের টুকরো হবে না। এটি আমাদের সেই ২৬ জন প্রাণের উপস্থিতি অনুভব করাবে যারা আর আমাদের সাথে নেই কিন্তু সর্বদা আমাদের হৃদয়ে থাকবে। এখানে আসা প্রতিটি পর্যটক, প্রতিটি কাশ্মীরি তাকে মনে রাখবে।
এই ঘোষণাটি কেবল একটি আবেগঘন মুহূর্ত ছিল না, এটি ছিল ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক দায়িত্ববোধেরও। পহেলগামের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র বাইসারন এখন শ্রদ্ধাঞ্জলি স্থান হিসেবেও স্বীকৃত হবে। ওমর আবদুল্লাহ দেশজুড়ে ট্যুর অপারেটরদের সাথে একটি ইন্টারেক্টিভ সেশনের সভাপতিত্ব করার সময় এই ঘোষণা দেন। এই কথোপকথনে তিনি পর্যটনের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের আশ্বস্ত করেন যে সরকার পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আবেগের দেশ
ওমর আবদুল্লাহ বলেন, পহেলগাম কেবল একটি পর্যটন কেন্দ্র নয়, এটি আবেগের ভূমি। আমরা হেরে গেছি, কিন্তু এখন আমাদের একসাথে এটি মেরামত করতে হবে। এই স্মারক স্মারকের উদ্দেশ্য কেবল শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান নয় বরং একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া - যে কাশ্মীর সন্ত্রাসকে ভয় পাবে না, বরং প্রতিটি ক্ষতকে মর্যাদায় রূপান্তরিত করবে।
এটি এক যন্ত্রণা যা কখনও ভোলা যাবে না
গত মাসে সংঘটিত এই সন্ত্রাসী হামলায়, সন্ত্রাসীরা পর্যটক ভর্তি একটি পর্যটন বাসে নির্বিচারে গুলি চালায়, যাতে ২৬ জন নিহত এবং অনেকে আহত হয়। পর্যটন মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে এই হামলাটি ঘটেছিল, যা কেবল পরিবারগুলিকেই নয়, কাশ্মীরের ভাবমূর্তিকেও নাড়া দিয়েছিল। বৈসারণে নির্মিত এই স্মৃতিস্তম্ভটি আর কেবল একটি পাথর থাকবে না বরং কাশ্মীরের বেঁচে থাকার এবং ন্যায়বিচারের আহ্বানের প্রতীক হবে। ওমর আবদুল্লাহর এই পদক্ষেপ দেখায় যে কাশ্মীর এখন কেবল ক্ষত বহন করে না, বরং জবাবও দেয়।
No comments:
Post a Comment